Tanwi Golder, owner of Jhorbhanga Vermicompost
ঝড়ভাঙ্গা ভার্মিকম্পোস্ট
909 Views

মাত্র ২২ বছর বয়সে আমি ঝড়ভাঙ্গা ভার্মিকম্পোস্ট শুরু করি, যেখানে উচ্চমানসম্পন্ন কম্পোস্ট তৈরি করা হয়। এ কম্পোস্ট ফসলের স্বাস্থ্য এবং উৎপাদনকে অনেকাংশে উন্নত করে। কৃষিতে ডিপ্লোমা শেষ করে, অলস বসে না থেকে আমি আমার জ্ঞানকে কাজে লাগানোর কথা ভাবি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী সচিবের সমর্থন ও অনুপ্রেরণায় আমি ভার্মিকম্পোস্ট উৎপাদন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই। 

ভার্মিকম্পোস্টের মূল উপাদান বিভিন্ন ধরণের কীট হওয়ায়, এ জাতীয় ব্যবসা মানুষ খুব নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখত। তাই আমাকে অসংখ্য তিরস্কার ও বিদ্রূপের মুখোমুখি হতে হয়েছে। অনেকাংশে এটি আমার আত্মবিশ্বাসকেও প্রভাবিত করেছিল। তবে আমার কাছের মানুষজন, বিশেষ করে আমার বাবা সবসময় আমার পাশে ছিলেন। তিনি প্রতিনিয়ত আমাকে সমালোচনায় প্রভাবিত না হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আমার কাজের সুফল আনবার দৃঢ় প্রতীক্ষা নিয়ে আমি সৎ চেষ্টা ও পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে কাজ চালিয়ে যাই।

২০১৭ সালের দিকেও আমার অঞ্চলের কৃষকরা ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহার করতেন না। তাই তাদেরকে এই পণ্যের সাথে পরিচয় করানো ছিল কষ্টসাধ্য। এ কারণে আমি নিজের ধান ক্ষেতে এই কম্পোস্ট ব্যবহার শুরু করি। কয়েক মাস পর, স্থানীয় চাষিরা আমার জমিতে বেড়ে ওঠা ধানের স্বাস্থ্যের বিশেষ পরিবর্তন দেখতে পেয়ে অবাক হন। আমি মাটিতে কী ব্যবহার করেছি তা জানতে বেশ কৌতুহল প্রকাশ করেন তারা। এভাবেই আমি কৃষকদের আমার পণ্য ব্যবহার করতে অনুপ্রাণিত করি। শুরু হয় আমার ব্যবসার পথচলা।

বর্তমানে আমি ১৫০ জন মহিলা ভার্মিকম্পোস্ট সরবরাহকারীদের একটি সমিতির এর সাথে কাজ করছি। আমার পণ্যগুলি স্থানীয় দোকানের পাশাপাশি সরাসরি চাষিদের কাছেও বিক্রি হয়। যখন আমার পণ্য ব্যবহার করে চাষিরা ভাল ফলাফল পাওয়া শুরু করল, আমার ব্যবসা দ্রুত বড় হতে লাগল। পাশাপাশি, আমার ব্যবসার জন্য একটি ফেসবুক পেজ আছে। আমার মোট আয়ের ২০% আসে এই পেজ এর বেচাকেনা থেকে। মাঝে মাঝে ক্রেতারা ফেসবুকের মাধ্যমে আমার পণ্য কেনেন। আমি এই প্লাটফর্মটি সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত কাঁচামাল কেনার কাজেও ব্যবহার করি। তাছাড়া, ফেসবুকের মাধ্যমে আমি সারাদেশের কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাতে পারছি।

Jhorbhanga Vermicompost

আমার কাজের সমালোচনা আমাকে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ও সাহস সঞ্চয় করেছে। তাই আমি আমার সমালোচকদের ধন্যবাদ জানাই। লাইটক্যাসল পার্টনার্স এক্সেলেরেটর প্রোগ্রামের অংশ থাকাকালীন, আমি ব্যবসার খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে পারি। পাশাপাশি আমি হিসাব বই ও প্যাকেজিং এর গুরুত্ব অনুধাবন করি। এতে করে আমার ব্যবসার সামগ্রিক উন্নতি হয়।

কয়েক বছর আগেও, আমার ব্যবসার ধরণের জন্য আমাকে বিভিন্ন রকম কথা শুনতে হত। আর এখন আমি আমার উদ্যোগের জন্য ‘বার্ষিক জয়িতা পুরস্কার ২০২০’ এর বিজয়ী। এটি আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।

আমার পরবর্তী স্বপ্ন আমার ভার্মিকম্পোস্টের একটি ব্র্যান্ড তৈরি করা। এজন্য আমার প্রয়োজন ৭০-৮০ হাজার টাকা। একটি ব্র‍্যান্ড আমার ব্যবসার দ্রুত প্রসার ঘটাতে এবং আরও জনপ্রিয়তা লাভ করতে সাহায্য করবে বলে আমার বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published.