ইকো ফার্নিচার
1,323 Views

আমি ব্যবসা শুরু করার আগে যে চাকরি করতাম সেটাও মূলত একটা ফার্নিচারের দোকানেই ছিল। আমার নিয়োগকর্তা এবং আমার গুরু, মোঃ হাবিল মিয়া, আমাকে ব্যবসা শুরু করার অনুপ্রেরণা দেন। তার অনেকদিনের উৎসাহ প্রদানের কারনেই আমি ২০১৩ সালে ইকো ফার্নিচার শুরু করার সাহস পাই। কিন্তু তবুও ব্যবসা শুরু হওয়ার পরে আমি অনেক ভয় পাচ্ছিলাম কেননা আমি মাত্র ক্লাস ৭ পর্যন্ত পড়াশুনা করেছি। তাই আমি নিজের প্রতি সে আস্থা পাচ্ছিলাম না যে আমি নিজের কোন ব্যবসা সফলভাবে দাঁড় করাতে পারব। কিন্তু আমার বড়ভাই, আবদুল গাফফার আমার ব্যবসার সকল পর্যায়ে আমার সাথে থেকে আমাকে শক্তি জুগিয়েছে। তার এই অভাবনীয় অবদানের কোন তুলনা হয়না। কিন্তু দুঃখের বিষয় এইটাই যে কিছু বছর আগে তার মৃত্যু আমাকে আবার একা করে দেয়। তাও আমি চাইনি যে আমার ব্যবসা থেমে থাক। তার উপদেশ মোতাবেক আমি ব্যবসা চালিয়ে গিয়েছি।

যদিও আমার ব্যবসা ভালভাবেই চলছে, কিন্তু তার মানে এই না যে আমার কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়না। প্রতিনিয়তই আর্থিক সমস্যা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন লেনদেন পর্যন্ত, কোন না কোন অসুবিধা লেগেই থাকে। এমনকি জনবলের ব্যবস্থাপনায়ও অনেক বাঁধা দেখা যায়। কিন্তু এসবও সব ব্যবসাতেই কমবেশি থাকে। সবচেয়ে বড় যে সমস্যা আমার আজ পর্যন্ত দেখতে হয়েছে তা হল প্রায় ২ বছর ধরে থাকা করোনা মহামারী। আমার ফ্যাক্টরি অনেক মাস ধরে বন্ধ রাখতে হয়েছিল কিন্তু ভাড়া পুরোটাই দিতে হয়েছিল। তার উপরে ইউটিলিটি বিল যোগ হয়েছিল এবং আমাকে আমার কর্মচারীদেরও বেতনও পরিশোধ করতে হয়েছিল যদিও কোন উপার্জনের উৎস ছিল না সেসময়ে। যাইহোক, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে শুরু করার সাথে সাথে আমার ব্যবসাও আবার নতুন করে শুরু হয়েছিল।

সুইসকন্টাক্ট ও লাইটক্যাসল পার্টনার্সের বদৌলতে আমি নিজের পুরানো ব্যবসাকে নতুন করে গড়ে তোলার ব্যাপারে সোচ্চার হতে পেরেছি। তাদের সাথে কাজ করার স্মৃতি অসাধারণ ছিল এবং আমি অনেককিছু শিখতে পেরেছি তাদের কাছ থেকে। বিশেষ করে বিপণনে যে আরও নতুনত্ব আনা সম্ভব তা উপলব্ধি করতে পেরেছি। তাই এখন আমার ব্যবসার জন্য আলাদা একটি ফেসবুক পেজ আছে এবং সেখানে আমার অনেক পণ্য তালিকা আকারে সাজানো আছে। এর কারণে অনেক গ্রাহক আমার ব্যবসার ব্যাপারে জানতে পারছে। আমি সেজন্য আমার ব্যবসাকে আরও বড় করার চিন্তা করছি।

আমার জীবনের মূল লক্ষ্য হল আমার ব্যবসাকে এমনভাবে পরিচালনা করা যাতে আমি আমার পণ্যের গুণমান বজায় রাখতে পারি এবং তা করার সময় আমার ব্যবসা, আমার কর্মচারী এবং আমার গ্রাহকদের প্রতি সৎ থাকতে পারি। এবং যদি সৃষ্টিকর্তা আমার সহায় হন তাহলে আমি  ব্যবসা আরও বাড়াতে চাই এবং আরও ভালোগুণের আসবাবপত্র তৈরি করতে চাই। শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারাটাও আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই, প্রতিপালক যদি সুযোগ দেন তাহলে আমি আমার ব্যবসাকে একটি বিশ্বমানের ফার্নিচার প্রস্তুতকারী কোম্পানিতে পরিণত করতে চাই।