Md. Habibur Rahman, Rangpur
হাবিব ট্রেডার্স
1,147 Views

আমি গোড়া থেকে সবকিছু শুরু করেছি। আমার কোন পারিবারিক ব্যবসা ছিল না এবং আমার পড়াশোনা প্রাথমিক পর্যন্ত। তবুও, আমার পরিবারের জন্য কিছু করার সংকল্প নিয়ে সর্বপ্রথমে চাল বিক্রির ব্যবসায় নামলাম। আমার স্ত্রী একটি মাইক্রো-লোন নিয়ে আমাকে সহায়তা করে। এই যাত্রা সেই ২০০১ সালে শুরু হয়। এখন, প্রায় ২০ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু আমি সেই একই উদ্যমে এগিয়ে চলেছি।

চাল নিয়ে বেশ কিছুদিন কাজ করার পরে, আমি ধানের দিকে মনোনিবেশ করি। ধান ব্যাবসায় অভ্যস্ত হতে আমার খুব বেশি সময় লাগেনি এটি আমাকে আমার ব্যবসায় আরও পণ্য যুক্ত করার সুযোগ এনে দেয়। তাই, আমি গৃহপালিত পশুদের খাদ্য পণ্য নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। তারপর, আমি এমন কিছু করার কথা ভাবলাম যা আমার ব্যবসাকে আরও বড় করার পাশাপাশি কৃষকভাইদের সহায়তা করবে। তাই ২০০৬ থেকে, আমি সুপরিচিত কিছু ব্র্যান্ড থেকে ভাল বীজ সংগ্রহ করে এবং আমার এলাকায় বিক্রি করা শুরু করি। আমি একদম ন্যায্য দামে তাদেরকে এসব পণ্য বিক্রি করে বাজারে অনেক ভাল অবস্থান ও আস্থা অর্জন করি।

শুরুতে তেমন পুঁজি না থাকায় কয়েক বছর ব্যাংক থেকে বেশ কিছু ঋণ নিতে হয়েছে। ২০০৬ সালে, আমি ২,০০,০০০ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম, এবং তা পরিশোধ করার পর, আমি আরও ৪,০০,০০০ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। আমার ব্যবসা ভালো চলছিল বলে ঋণ নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। পরবর্তীতে, আমি ৩৫,০০,০০০ টাকার বড় একটি ঋণ নিই যা আমার ব্যবসাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এসবের মধ্যে আমি অনেক আবাদি জমি ক্রয় করি শাকসবজি চাষের জন্য।

যদিও আমি ইতিমধ্যেই আমার প্রতিযোগিতামূলক মূল্য এবং ভালো মানের বীজের কারণে বাজারের একটি বড় অংশ দখল করেছি, আমি নতুন জিনিস চেষ্টা করতে চেয়েছিলাম। তাই, আমি আমার ব্যবসায় সার এবং ওষুধ যোগ করার সিদ্ধান্ত নিই। অর্থাৎ, আমি প্রায় সবধরনের কৃষিপণ্য সরবরাহ করা শুরু করি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নতুন কিছু নিয়ে কাজ করা আমার কাছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বলে মনে হয়।

বছরের পর বছর ধরে, আমি অনেক বাঁধা-বিপত্তি ও বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছি কিন্তু কোভিড -১৯ মহামারীর তুলনায় সবকিছু অনেক সামান্য বলে মনে হয় এখন। আমার মত অনেক উদ্যোক্তা প্রচন্ড ধাক্কা খেয়েছে। আমি সাধারণত বাংলা নববর্ষের শুরুতে সমস্ত ধার করা টাকা ফেরত পাই। কিন্তু, এবারে কারো হাতে মূলধন একদমই নেই। তাই, ৫০,০০,০০০ টাকার বেশি নগদ অর্থ এখনও আমি ফেরত পাইনি। এর উপরে আমার আরও কিছু ঋণ নিতে হয়েছে। আমি জানি না কখন আমি এই ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করব, তবে আমি ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী।

২০০১ থেকে বর্তমান, আমি এখনও একই ধরনের কৌতূহল ও উৎসাহ রাখি সকল প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে যোগদানের বিষয়ে কেননা আমি সবসময়ই নতুন কিছু শিখতে চাই। ট্রুভালু এবং লাইটক্যাসল পার্টনারদের দ্বারা আয়োজিত প্রশিক্ষণ সেমিনারটি তাদের আতিথেয়তা এবং অবিশ্বাস্য ব্যবসায়িক অন্তর্দৃষ্টির কারণে আমার কাছে স্মরণীয় ছিল। এখন, আমার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ হল বীজ বাজারে একটি শক্তিশালী নাম তৈরি করা এবং নিজের একটি ব্র্যান্ড তৈরি করা। আমি চাই প্রত্যেক কৃষক এবং উদ্যোক্তা তাদের চাকরিকে সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখুক যাতে আমরা সবাই মিলে শান্তিপূর্ণভাবে বেড়ে উঠতে পারি।