আমি জি এল স্মার্ট সুজ নিজের একক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুরু করি ২০০৮ সালে, কিশোরগঞ্জে। তার আগে, আমি একটা স্থানীয় সু ফ্যাক্টরি তে কাজ করেছিলাম, আমার পড়াশুনার পাশাপাশি। আমি মাধ্যমিকের শেষ পর্যন্ত আমার পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পেরেছি কিন্তু এরপরে আর সম্ভব হয়নি। আমি ঐ ফ্যাক্টরিতে দুই-তিন বছর কাজ করার পরে কারিগরি দক্ষতা এবং স্থানীয় বাজার থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করার সম্পর্ক স্থাপন করে ফেলেছিলাম। আমার এই দক্ষতা এবং পরিবারের বিনিয়োগ আমাকে নতুন ব্যবসা শুরু করার সুযোগ করে দেয়। এত অল্প বয়সে একটি নতুন ব্যবসা শুরু করা কঠিন ছিল কিন্তু আমার পূর্বের কর্মক্ষেত্র থেকে আমার জ্ঞান এগিয়ে যাওয়া সহজ করে দিয়েছে।
বর্তমান অবস্থায়, আমি আমার পণ্য বিক্রি করে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মেটানোর দিকে জোর দিচ্ছি। এটা করতে গিয়ে আমি দুটি বড় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। প্রথমটি হচ্ছে কর্মক্ষম ও অনুগত কর্মীদের খুঁজে বের করা। কর্মীরা যখন কাজ করা শিখে যায় তখন তারা আর থাকতে চায় না। একটি জুতা তৈরির জন্য পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়ায় একাধিক দক্ষ লোকবল প্রয়োজন। কিন্তু এইরকম দক্ষ ও অনুগত কর্মীদের অভাবে আমার জুতা উৎপাদন কার্যকরভাবে চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর হয়ে উঠছে। যেটা অবশ্যই আমার ব্যবসার জন্য ভালো কিছু নয়। অপরদিকে, জুতা বিক্রির সাথে সবসময় যে ব্যবসায় সাথে সাথে টাকা নিয়ে আনে। বেশিরভাগ গ্রাহক ক্রেডিট দিয়ে পণ্য ক্রয় করে এবং এর ফলে আমার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ থাকে না পুনর্বিনিয়োগ করার জন্য। এত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য নগদ অর্থ অতিব জরুরি কেননা তাছাড়া আসলে ব্যবসা টিকে রাখা সম্ভব হয়ে উঠে না। এছাড়াও, অনেক বিদেশী পণ্য বাজারে প্রবেশ করায় এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে, জুতা শিল্পে স্থানীয় হস্তশিল্পের চাহিদা দিনে দিনে কমে আসছে।
অন্যসব ব্যবসার মতো, করোনা মহামারীর কারণে আমাদের ব্যবসাও অনেক বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়। আমার ২-৩ মাস কোন পণ্য বিক্রি করা ছাড়াই সকল কর্মীদের বেতন দিতে হয়েছিল। এমনকি, ছয় মাস ধরে আমি আমার দোকানও খুলতে পারিনি। করোনার প্রকোপ আমার উদ্যোক্তা জীবনের সবচেয়ে বীভৎস সময়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় যেখানে আমার নিজের পরিবারের ভার নেওয়াই কষ্টকর হয়ে উঠছিল। কিন্তু তাও আমি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করলাম সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার এবংকিছু ঋণ পাওয়ার পরে আবার ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে শুরু করি।
আমি লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম যখন তারা আমাদের কারখানা পরিদর্শন করতে এসেছিল। আমি তাদের সাথে শেষ কাজ করেছিলাম প্রায় দুই বছর আগে। তারা আমাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিপণন ব্যবস্থা সম্পর্কে শেখায় যেন আমি আরও বেশি বিক্রি করতে পারি এবং আমার পণ্য গুলো জনসাধারণের কাছে আরও সারা পায়। আমি এইরকম আরও কিছু বিপণনক্ষেত্রর ব্যাপারে জানতে ও কাজ করতে সদা আগ্রহী। এটি আমাকে কারখানার উন্নয়নের জন্য কিছু তহবিল পেতে সাহায্য করবে যাতে আমি রপ্তানি শিল্পের দিকে আমার পণ্যগুলো নিয়ে যেতে পারি। ভবিষ্যতের দিনগুলিতে, আমি আমার পণ্য রপ্তানি করার আরও সুযোগের অপেক্ষায় আছি এবং পণ্যের মান আরও ভালো করার ব্যাপারে কাজ করার পরিকল্পনা করছি।